কিমকে খুশি করতে সারাহকে উ. কোরিয়া পাঠাতে চেয়েছেন ট্রাম্প

২০১৮ সালে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে ঐতিহাসিক বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই বৈঠক উপস্থিত ছিলেন হোয়াইট হাউসের সাবেক প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডর্সও। তখন সারার রূপে মোহিত হয়েছিলেন কিম জং উন।

মঙ্গলবার (০১ সেপ্টেম্বর) সারাহ’র নতুন বই ‘হার মেমোরি’ প্রকাশিত হচ্ছে। বইতে সে সময়কার একটি ঘটনা তুলে ধরেছেন তিনি। ২০১৮ সালের ওই সম্মেলনে ট্রাম্প, কিম এবং তাদের শীর্ষ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাহ তার বইয়ে বৈঠকের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘সম্মেলনে আলোচনায় অনিচ্ছতা সত্ত্বেও ট্রাম্পের কাছ থেকে একটি টিক ট্যাক মিন্ট (চকলেট) নিয়েছিলেন কিম। তখন নাটকীয়ভাবে একটি চকলেট বাতাসে উড়িয়ে দেন ট্রাম্প। কিমকে নিশ্চিত করেন এটি শ্বাস-প্রশ্বাস পরিষ্কার করার একটি চকলেট। বিষ নয়।

পরে কিম-ট্রাম্প নারীদের ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলার বিষয়ে কথা বলেন। ওই সময় সারাহ লক্ষ্য করেন, কিম তার দিকে অপলক তাকিয়ে আছেন। বলেন সারাহ স্যান্ডার্স।

‘আমাদের চোখাচোখি হয়েছে। কিম মাথা নেড়েছেন। আমাকে ইঙ্গিত দিয়েছেন।’ সারাহ বলেন, আমি হতবাক হয়ে যাই। তৎক্ষণাত আমি চোখ নামিয়ে নেই এবং তাদের আলোচনার নোট নিতে থাকি।

তিনি বলেন, আমি ভাবছিলাম, কী হয়ে গেল এটা। নিশ্চিতভাবে কিম আমাকে উদ্দেশ্য করে এমন করেননি তো?

সারাহ বলেন, তারা পরে প্রেসিডেন্সিয়াল লিমুজিনে করে যাচ্ছিলেন। সেখানে ট্রাম্প, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ জন ক্যালি ছিলেন। তিনি কিমের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা তাদের জানান।

সারাহ বলেন, তখন ট্রাম্প বলেন, কিম তোমাকে চাচ্ছে। সে তোমাকে একান্তেই চাচ্ছে। উত্তরে সারাহ বলেন, দয়া করে এসব বন্ধ করেন স্যার।

‘ঠিক আছে সারাহ। এটা সিদ্ধান্ত, তুমি উত্তর কোরিয়া যাচ্ছো। আমাদের দলের জন্য কিছু করবে।’ বলেন ট্রাম্প। বইতে সারাহ উল্লেখ করেন। সারা বলেন, ট্রাম্প বলেছেন, তোমার স্বামী সন্তানেরা তোমাকে মিস করবে। কিন্তু তুমি আমাদের দেশের নায়েক হয়ে যাবে।

সারাহ বলেন, এটা বলে ট্রাম্প এবং ক্যালি চিৎকার করে হাসছিলেন।

শুরুর দিকে ট্রাম্প কিমের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক ছিল। ২০১৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ভাষণে কিমকে রকেট ম্যান আখ্যা দেন ট্রাম্প। পরমাণু অস্ত্রের উন্নয়ন বন্ধ না করলে উত্তর কোরিয়ায় সামরিক হামলার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

২০১৮ সালের বৈঠকের দু’নেতার মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। অব্যাহতবভাবে একে অপরের প্রশংসা করছেন তারা।

এ পর্যন্ত তিনবার বৈঠক করেছেন ট্রাম্প-কিম। সিঙ্গাপুরে ২০১৮ সালে প্রথম বৈঠক করেন তারা। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় বৈঠক হয় ভিয়েতনামে। ওই বছরের জুনে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার অসামরিক অঞ্চল পানমুনজমে তৃতীয় বৈঠক করেন দু’নেতা। প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

২০১৮ সালে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, তিনি কিমের প্রেমে পড়েছেন। তারপর কিম জং উন তাকে চিঠি পাঠান। যাকে চমৎকার চিঠি আখ্যা দেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পকে নিয়ে লেখা জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বব উডওয়ার্ডের দ্বিতীয় বই র‌্যাজ ১৫ সেপ্টেম্বের প্রকাশিত হবে। বইতে, কিমের চিঠি সম্পর্কে তিনি লেখেন, কিম চিঠিতে ট্রাম্পকে বলেছেন, আপনার-আমার সম্পর্ক ফ্যান্টাসি ফিল্মের (কাল্পনিক চলচ্চিত্র) উর্ধ্বে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *