লণ্ডভণ্ড সাতক্ষীরা
লণ্ডভণ্ড সাতক্ষীরা
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা। বুধবার রাতভর তাণ্ডব চালিয়ে আম্পান ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে অধিকাংশ গাছপালা, উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঘরের চাল, নষ্ট করেছে হাজার হাজার একর জমির ফসল। ভাসিয়ে নিয়ে গেছে শত শত একর জামির ঘেরের মাছ। ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট জলচ্ছাসে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি ও গবাদিপশু। সড়কে গাছ পড়ে বন্দ হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বৈদ্যুতিক খুটি ভেঙে ও তার ছিড়ে বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে সাতক্ষীরাবাসী। চারদিকে তাকালে চোখে পড়বে শুধু ধ্বংসযঞ্জের চিত্র। এ যেনো এক মহাপ্রলয়ঙ্কারী ঝড়। যা কয়েক যুগ চোখে পড়েনি অনেকের।
দুর্বিসহ সেই রাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে সাতক্ষীরার কলোরোয়া উপজেলার সোনাবাড়ীয়া গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক আবু রাইহান মিকাইল প্রবাসের আলোকে বলেন, খুব ভয়ঙ্কর একটি রাত অতিবাহিত করলাম, সন্ধা থেকে শুরু হওয়া ঝড়ে রাত বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে গতি ও বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে দেখলাম আমাদের রান্না খরের চাল উড়ে গেছে। এর কিছুক্ষণ পর শোবার ঘরে আঘাত হানে আম্পান। মহুর্তেই ঘরের চাল উড়ে পাশের রাস্তার উপর পড়ে। মনে হলো আজই হয়তো শেষ দিন। এরপর সবাইকে নিয়ে কোনো রকম পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে শেষ রক্ষা। তিনি বলেন, ২৪-২৫ বছর বয়সের জীবনে এমন ঝড় কখনও দেখিনি।
সাংবাদিক হুমায়ন আহম্মেদ বিলাশ বলেন, আমার পরিবার মূলত ধান ও ফল চাষী। এই ঝড়ে আমাদের সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। ফলের বাগন ঝড়ে ভেঙে যাওয়ায় নষ্ট হয়েছে কয়েক লাখ টাকার আম কাঁঠাল। গাছ পড়ে ভেঙে গেছে গোয়াল ঘর। রাশিদা খাতুন বলেন, রাতভর ঝড়ের যে তা-ব দেখেছি তা আমার ৭০ বছরের জিন্দেগিতে দেখিনি। ঝড়ে আমারসহ আশপাশের বহু মানুষের ফলের গাছ নষ্ট হয়েছে। আমার দেখামতে এলাকার এক চতুর্থাংশ গাছ ভেঙে গেছে।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তায় পড়ে থাকা গাছ সরিয়ে নিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
Originally posted 2020-05-21 21:27:43.