আত্মসমর্পণের পর জামিন পেলেন এমপি পাপুলের স্ত্রী ও মেয়ে
অবৈধ সম্পদ ও মানিল্ডারিং আইনের মামলায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন। রোববার বিকেলে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে পাপুল, তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ ও মানিলল্ডারিং আইনের মামলায় ৬১৭টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ ও ৯১টি তফসিলভুক্ত সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন একই আদালত। এ ছাড়া পাপুলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সিআইডির করা মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় ৫৩ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
পাপুলের স্ত্রী ও মেয়ে সম্প্রতি উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন না দিয়ে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। নির্দেশ মোতাবেক আজ রোববার দুপুরে আসামিরা আইনজীবী ব্যারিস্টার মাসুমুর রহমান মজুমদার ও শ্রী প্রাননাথ মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল, মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের জামিনের আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে দুই কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ এবং ১৪৮ কোটি টাকার অর্থপাচারের অভিযোগে গত ১১ নভেম্বর তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন।
মামলার অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকা লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জেসমিন প্রধানের পাঁচটি হিসাবের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ড লন্ডারিং হয় ১৪৮ কোটি টাকা। অথচ মাত্র বয়স ২৩ বছর বয়সী জেসমিনের নিজের কোনো আয়ের উৎস নেই।
অন্যদিকে, এফডিআর হিসাবের দুই কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার কোনো উৎস শ্যালিকা জেসমিন দাখিল করতে পারেননি। যে কারণে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে সিআইডির মামলায় বলা হয়, আসামিরা মানবপাচারকারী চক্র। তারা বিভিন্ন সময় ৩৮ কোটি ২২ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৭ টাকা অবৈধভাবে আয় করেছেন। ওই ঘটনায় গত ২২ ডিসেম্বর সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (অর্গানাইজ ক্রাইম) আলামিন বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম, ভাই কাজী বদরুল আলম লিটন, ব্যক্তিগত কর্মচারী মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান মনির, জেসমিন প্রধানের কোম্পানি জে ডব্লিউ লীলাবালী, কাজী বদরুল আল লিটনের মালিনাধীন কোম্পানি জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল এবং এই কোম্পানির ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫-৬ জন।