৫২ অ্যাপ ব্যবহারকারীর বিপদ, তথ্য চলে যাচ্ছে গোয়েন্দা সংস্থায়!

বিশ্ব জুড়ে মোবাইল অ্যাপের দুনিয়ায় রমরমা বাণিজ্য করছে চীন। এর আড়ালেই অ্যাপগুলো মাধ্যমে মানুষে গোপন তথ্য চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে দেশটির গোয়েন্দারা, এমন অভিযোগের তদন্তে নেমেছে ভারতের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল সেক্রেটারিয়েট।

সংস্থাটি সতর্ক করে বলছে, ভারতে চীনের তৈরি ৫২ মোবাইল অ্যাপে মাধ্যমে দেশটির জনগণের তথ্য চুরি হওয়া প্রমাণ মিলেছে, তাই তা ব্যবহার না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে টিকটক, হেলো, ভিগো ভিডিয়োর, উইচ্যাট, মতো জনপ্রিয় অ্যাপ। যা কিনা রীতিমতো বিপদ ডেকে আনছে। এর আগেও এই ধরণের অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এরইমধ্যে ৫২ টি কালো তালিকাভুক্ত মোবাইল অ্যাপের নাম কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা দিয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সেখানে মোবাইল অ্যাপগুলো বন্ধ করে দেয়ার আর্জি জানান হয়েছে। তবে অবিলম্বে মোবাইল অ্যাপগুলি দেশের নাগরিকরা যাতে ব্যবহার করা বন্ধ করে দেন তার জন্যও আবেদন করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মনে করছে, ওই ৫২টি মোবাইল অ্যাপে লুকিয়ে রয়েছে বিপদ। অ্যাপের মাধ্যমেই পাচার হয়ে যেতে পারে দেশের গোপন তথ্য। নাগরিকদের ব্যক্তিগত পরিসরে থাকা তথ্যও পাচার হয়ে যেতে পারে বলে গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে আশঙ্কা করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্তা জানিয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থার এই দাবিকে সমর্থন করেছে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল সেক্রেটারিয়েট। যেসব মোবাইল অ্যাপগুলোর ওপর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে, সেগুলির মধ্যে নাম রয়েছে, টিকটক, জুম, শেয়ারইট, জেন্ডার, এইসিব্রাউজারের মত জনপ্রিয় অ্যাপের। এগুলি প্রত্যেকটি চীনা ইন্টারনেট সংস্থা বাইটডান্সের মালিকানাধীন বা পরিচালিত।

কেন্দ্রীয় সরকারে এক কর্মকর্তার কথায়, গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া তালিকায় অনেকগুলো অ্যান্ড্রয়েয়েড বা আইএএস অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে যা চীনা সংস্থার তৈরি। ওই অ্যাপগুলোর লিঙ্ক ব্যবহার করে স্পাইওয়্যার বা আপত্তিকর কাজে প্রতিপক্ষ ব্যবহার করতে পারে বলেও দাবি করা হয়েছে। তাই নিজের ও দেশের ক্ষতি এড়াতে তালিকাভুক্ত ৫২টি চীনা অ্যাপ ব্যবহার না করার আবেদন জানান হয়েছে।

দেশের সুরক্ষার জন্য নিরাপত্তা সংস্থার চীনা সম্পর্কযুক্ত হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যারগুলো নিয়ে রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিরোধের সময় চীন পাচার হওয়া তথ্য ভারতের বিরুদ্ধে কাজে লাগাতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। মোবাইল অ্যাপের ক্ষতির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

চলতি বছর এপ্রিলেই সরকারি কাজে জুম অ্যাপ ব্যবহার না করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র ভারতই একমাত্র দেশ নয় যে জুমের বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। তাইওয়ানেও জুম ব্যবহারে বিধিনিষেধ রয়েছে। জার্মান বিদেশ মন্ত্রীও জুমের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন। আবার মার্কিন সেনেটের সদস্যদেরও অন্য কোনও অ্যাপ ব্যবহার করার আবেদন জানান হয়েছে।

Originally posted 2020-06-19 20:23:22.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *