ঢাবিতে মোদি বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ২০
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে আয়োজিত কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল ছাত্রজোট কর্তৃক আয়োজিত কর্মসূচিতে এই হামলা চালানো হয়। এতে ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার বিকালে নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। তবে সকাল থেকে রাজু ভাস্কর্য এলাকায় অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ছাত্রজোটের ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মী টিএসসি চত্ত্বর থেকে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে আবার টিএসসিতে এসে নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা দাহ করতে থাকেন এবং ভারতবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী কুশপুত্তলিকার আগুন নেভানোর জন্য দূর থেকে পানি ছুড়তে থাকে। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। জোটের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে ছাত্রলীগ সংঘবদ্ধ হয়ে আবারও তাদের ওপর হামলা চালালে দুপক্ষই সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
ছাত্রলীগের কর্মীরা বাশ, লাঠি ও হেলমেট দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে মানবজমিনের ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ, দেশ রূপান্তরের ফটো সাংবাদিক রুবেল রশিদ, জুমা প্রেসের কাজী সালাহউদ্দিন, ইউএনবির জাবেদ হাসান চৌধুরী, ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক হিমুসহ জোটের অন্তত ১৫ জন আহত হন।
পরে আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হামলায় ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার, ঢাবি শাখার সহ-সভাপতি সাদিকুর রহমান সাদিক, ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তমা বর্মন, ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু, কেন্দ্রীয় নেতা আসমানী আশা, ঢাবি শাখার নেতা মেঘমল্লার বসু, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাবি শাখার সভাপতি জাবির আহমেদ জুবেলসহ প্রগতিশীল ছাত্র জোটের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।
এদিকে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ওপর হামলায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদি হাসান শান্ত, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাহিম হাসান, এফ রহমান হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ সাজুসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
হামলার বিষয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয় বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় আমাদের অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ থেকে ৮ জন গুরুতর আহত হয়েছে।