স্পেনকে হারিয়ে নেশনস লিগ চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স

প্রথমার্ধ গোল শূন্য থাকার পর ৬৪ মিনিটে প্রথম গোল পায় স্পেন। তবে সেই গোল শোধ করতে মাত্র ২ মিনিট সময় নেয় ফ্রান্স। ৬৪ মিনিটে বেনজেমার গোলে সমতায় ফেরে ফ্রান্স। খেলার ৮০ মিনিটে এমপাপ্পের গোলে ২-১ ব্যবধান নিয়ে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। বাংলাদেশ সময় রবিবার দিবাগত রাত ১২.৪৫ মিনিটে শুরু হয় ম্যাচটি।

একঝাঁক তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে দীর্ঘ ৯ বছর পর কোনও আন্তর্জাতিক খেতাব জয়ের সুযোগ থাকলেও শেষ হাসি হেসেছে ফ্রান্স। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ইউরো কাপে শেষ সাফল্যের মুখ দেখেছিল তারা।

সেমিফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষেও পিছিয়ে পড়ে জিতেছিল ফ্রান্স। ৬৪ মিনিটে মিকেল ওইয়ারসাবালের গোলের পর তাই স্পেনের আনন্দের সঙ্গে দুশ্চিন্তাও একেবারে মিলিয়ে যাওয়ার কথা না। আগের ৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে ৭টিতে প্রথমে গোল হজম করেও যে ফ্রান্স হারেনি!

সান সিরোয় আজ স্পেনের বিপক্ষে নেশনস লিগের ফাইনালেও পিছিয়ে পড়েছিল ফ্রান্স। কিন্তু সেই বেলজিয়াম ম্যাচের মতোই আরেকটি ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখে ২-১ গোলের জয়ে নেশনস লিগ জিতেছে দিদিয়ের দেশমের দল।

গোল হজমের মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে দারুণ এক গোলে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান করিম বেনজেমা। ৮০ মিনিটে জয়সূচক গোলটি কিলিয়ান এমবাপ্পের।

বেলজিয়ামের বিপক্ষে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়া ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান বেনজেমা এবং এমবাপ্পে। আজ বেনজেমার গোলটি যদি হয় দুর্দান্ত, এমবাপ্পের গোল ঠান্ডা মাথার ফিনিশ।

প্রথমার্ধে তুলনামূলক ম্যাড়ম্যাড়ে খেলা দুই দল বিরতির পর খেলার গতি পাল্টায়। পাসিংও নিখুঁত হয়ে ওঠে। এই ধারাবাহিকতায় ৬৪ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত ফ্রান্স।

পাল্টা আক্রমণে ওঠার সময় বাঁ প্রান্তে বেনজেমাকে বল বাড়ান পল পগবা। বেনজেমার দ্রুতগতির ক্রসে থিও হার্নান্দেজের নেওয়া শট ক্রসবারে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ঠ। চলতি বলেই পাল্টা আক্রমণে ওঠে স্পেন।

সের্হিও বুসকেটসের দারুণ পাস থেকে ফ্রান্সের বিপদসীমায় বল পান মিকেল ওইয়ারসাবাল। ৪৩ মিনিটে রাফায়েল ভারানের বদলি হয়ে নামা ডিফেন্ডার দায়োত আপামেকানো ওইয়াসাবালের সঙ্গে লেগে থেকেও বল নিতে পারেননি। বাঁ পায়ের নিখুঁত ফিনিশে স্পেনকে এগিয়ে দেন ওইয়ারসাবাল।

বিরতির পর গতিময় ফুটবল খেললেও পিছিয়ে পড়ে ফ্রান্স যেন গা ঝাড়া দিয়ে উঠল! এবারও মাঝ মাঠের সঙ্গে ফরাসি আক্রমণভাগের যোগসূত্র গড়েন পগবা। তাঁর পাস কিলিয়ান এমবাপ্পে হয়ে পেয়ে যান বাঁ প্রান্তে জায়গা খোঁজা বেনজেমা।

কোনটা দুরহ হলেও বক্সের বাইরে থেকে দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে নেওয়া বাঁকানো শটে দেখার মতো এক গোল করেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগে এমবাপ্পের গোলের উৎস ছিলেন থিও হার্নান্দেজ।
তাঁর ডিফেন্স চেরা পাস থেকে স্প্যানিশ গোলকিপার উনাই সিমোনকে একা পেয়ে যান এমবাপ্পে। ফ্রান্সকে এগিয়ে দিতে তাঁর অসুবিধা হয়নি।

গোটা ম্যাচে ৬২৬টি পাস খেলেছে স্পেন। দুই অর্ধে বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ পেলেও ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় পারেনি। নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগে ওইয়ারসাবাল গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন।

রাইট উইংয়ে ফেরান তোরেস প্রথমার্ধে দারুণ খেললেও তাঁর তৈরি করা সুযোগগুলো সতীর্থরা কাজে লাগাতে পারেনি। ফ্রান্স সে তুলনায় প্রায় অর্ধেক (৩৫৩) পাস খেলেই আসল কাজটা আদায় করে নিয়েছে। ম্যাচে ৬৪ শতাংশ স্পেনের দখলে ছিল বল।

ফ্রান্সের হয়ে মাঝমাঠে দারুণ খেলেছেন পগবা। সতীর্থদের মধ্যে যে কারও চেয়ে বেশি বল স্পর্শ করেছেন। নেশনস লিগে এর আগে প্রথম সংস্করণে শিরোপা জিতেছিল পর্তুগাল। এবার দ্বিতীয় সংস্করণে শিরোপা জিতল ফ্রান্স।

Originally posted 2021-10-11 05:50:43.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *