দ্বিপাক্ষিক জলবায়ু অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য

উন্নয়নের পথযাত্রায় কমমাত্রার কার্বন নির্গমনের উপায় অবলম্বনের লক্ষ্যে ঢাকার উদ্যোগের প্রতি সমর্থনে অর্থিক ও প্রযুক্তি সহায়তা সহজলভ্য করতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য (ইউকে) দ্বিপাক্ষিক জলবায়ু অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত চতুর্থ কৌশলগত সংলাপে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য চলতি বছরের শুরুতে সম্মতির ভিত্তিতে অংশীদারিত্বের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ব্রিটেন তাদের ঐতিহাসিক ও বহুমাত্রিক সম্পর্কের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন দিনব্যাপী আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকে উভয় পক্ষ যুক্তরাজ্যের কপ-২৬ প্রেসিডেন্সি এবং ক্লাইমেট ভালনেরাবল ফোরামে (সিভিএফ) বাংলাদেশের নেতৃত্ব সমন্বয়ে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলার পদক্ষেপের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।

ব্রিটিশ পক্ষ অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকা বিশেষ করে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিষয়ে মনোনিবেশ করে যুক্তরাজ্যের সমন্বিত বৈদেশিক বাণিজ্য, উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা নীতি পর্যালোচনার প্রেক্ষাপটে এর বিশেষ প্রাসঙ্গিকতা স্বীকার করে।

উভয় পক্ষই সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মহলকে সাথে নিয়ে রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধানে সম্পৃক্ত থাকতে সম্মত হয়েছে।

উভয় প্রতিনিধিদল আফগানিস্তানে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন। মাসুদ বিন মোমেন কোভিড-১৯ সংক্রমণ এবং টিকা দেওয়ার হারের পরিপ্রেক্ষিতে ক্রমাগত উন্নতির কথা বিবেচনা করে অগ্রাধিকার হিসেবে বাংলাদেশের ওপর আরোপিত বর্তমান ভ্রমণ বিধিনিষেধ পর্যালোচনা করার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানান।

দুই পক্ষই সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি সংস্থার মাধ্যমে নমুনার পরীক্ষার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

মাসুদ বলেন, গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে গভীর কৌশলগত সম্পৃক্ততার লক্ষ্যে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির পুনর্বিন্যাসে আমাদের প্রয়াস অনুযায়ী বর্তমানে ৫০ বছরে বাংলাদেশ এবং ব্রেক্সিট-পরবর্তী যুক্তরাজ্যের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার সুযোগ রয়েছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) স্থায়ী আন্ডার সেক্রেটারি স্যার ফিলিপ বার্টন অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক ইস্যুতে দুটি গণতান্ত্রিক দেশের সম্পৃক্ত থাকার গুরুত্বকে তুলে ধরেছেন।

দুটি প্রতিনিধিদল মহামারির পরে নারী শিক্ষার ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়ে শিক্ষা বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে মতবিনিময় করেছে।

যুক্তরাজ্য নতুন অভিবাসন নীতি আরও ব্যাখ্যা করে জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা শেষ করার পর দুই থেকে তিন বছর কাজ করার সুযোগ পাবে।

উভয় পক্ষ গবেষণা এবং উদ্ভাবনে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা আরও গভীর করার উপায় অনুসন্ধান করতে সম্মত হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল এলডিসি থেকে উত্তরণের পর অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানায়।

উভয় পক্ষ ব্যবসায় যোগাযোগ এবং চেম্বারস অফ কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যকে আরও সহজতর করতে সম্মত হয়েছে।

উভয় পক্ষ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সূচিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সংলাপকে স্বাগত জানিয়েছে।

দুই প্রতিনিধি দল সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা এবং মানবাধিকার সুরক্ষা, বিমান, সমুদ্রযাত্রায় এবং সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার জন্য তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।

তারা একটি সুষ্ঠু মাইগ্রেশন এবং স্থানান্তর অংশীদারিত্ব তৈরি করার লক্ষ্যে একটি ব্যাপক সংলাপ শুরু করতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে।

উভয় পক্ষই কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছরের স্মরণে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মত বিনিময় করেছে। দুই প্রতিনিধি দল যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী প্রবাসীদের বহুমুখী অবদানের প্রশংসা করে। সূত্র: বাসস

Originally posted 2021-09-11 07:28:08.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *