সৌদি প্রবাসী অনেকের ফেরা অনিশ্চিত

ভিসা-ইকামা জটিলতায় কয়েক হাজার সৌদি প্রবাসীর ফেরা এখনও অনিশ্চিত। তারপরও আশায় বুক বাঁধছেন তারা। সৌদি দূতাবাস থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে ভিসার মেয়াদ বাড়াতে পারলেও কাঙ্ক্ষিত টিকিট পাওয়া নিয়ে সংশয় কাটছে না। মেয়াদ থাকতে থাকতেই সৌদি যেতে হলে ফ্লাইট বাড়ানো ছাড়া কোনো উপায় নেই।

সৌদি এয়ারলাইন্সের ম্যানেজার (সেলস) ওমর খৈয়াম বলেন, আমাদের কাউন্টারগুলোয় কাজ শুরু হয় সকাল ৯টায়। চলে অনেক রাত পর্যন্ত। আমরা আমাদের সব সামর্থ্য দিয়ে কাউন্টার থেকে প্রতিদিন ৪৫০ মানুষকে টিকিট দিতে পারছি। কখনও কখনও সেটা ৫০০ হয়। যাদের ভিসার মেয়াদ কম রয়েছে, তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। এরপরও যদি কেউ লাইনে থাকেন, আমরা তাদেরও টিকিট দিচ্ছি।

বৃহস্পতিবার সৌদি এয়ারলাইন্সের কারওয়ান বাজার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকশ’ মানুষ সেখানে ভিড় করেছেন। অফিসের বাইরেও অপেক্ষায় ছিলেন অনেক প্রবাসী। অনেকে অবস্থান নিয়ে ছিলেন রাস্তায়। তাদেরই একজন নেত্রকোনার শামীম আহমেদ বলেন, অনেক কষ্ট করে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে মনে হচ্ছে ভুল করেছিলাম। এখন টিকিটের জন্য এলে বলে আপনার ভিসার মেয়াদ দুই মাস আছে। পরে যোগাযোগ করেন। অথচ আমার ফেরা খুব দরকার। দেশে তো আমাদের কোনো কাজ নেই। অর্থ-সঞ্চয় যা ছিল, তার সবই প্রায় শেষ। ধার-দেনা করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় সেখানে ফেরা ছাড়া আর কোনো গতি নেই।

তবে ব্যতিক্রম চিত্রও দেখা গেছে। অনেকেই টিকিট পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করছেন। নোয়াখালীর আলিম মিয়া দীর্ঘ তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর টিকিট রি-ইস্যু করতে পেরেছেন। বললেন, খুব খুশি লাগছে এখন। কয়েকটা দিন ধরে কষ্ট করতেছি। আজ আসতে বলছে। টিকিট দিয়েছে। যাক রুটিরুজির পথটা এ যাত্রায় হয়তো টিকে যাবে।

তবে প্রবাসীদের অনেকেই ভিসা-ইকামার মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে বেকায়দায় আছেন। কারওয়ান বাজারে আরেক সৌদি প্রবাসীর সঙ্গে এসেছিলেন কামরুল হাসান। বললেন, ওনার কফিল ভালো, মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমার কফিলকে বারবার বলেও ইকামার মেয়াদ বাড়াতে পারছি না। টাকার কথা বলেও রাজি করাতে পারছি না। এখন কোনো উপায় দেখছি না। এই অবস্থায় সৌদি দূতাবাসে গিয়েও কোনো কাজ হবে বলে তো মনে হচ্ছে না। তারপরও দেখি যাব।

কামরুল হাসান আরও বলেন, কয়েক হাজার সৌদি প্রবাসীর ভিসা-ইকামার মেয়াদ নেই। এরা কী করবে, সে বিষয়ে সরকারকে সৌদি সরকারের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তারা কীভাবে ফিরতে পারবে, এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দরকার। নইলে প্রবাসীদের অনেকেই বেকার হয়ে যাবে।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *