দেশে ৫১ শতাংশ পরিবারের আয় শূন্য

করোনার কারণে দারিদ্রের হার বাড়ায় পুষ্টি নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। এ কারণে বাংলাদেশে ৯৫ শতাংশ পরিবারের আয় কমেছে এবং ৫১ শতাংশ পরিবারের আয় শূন্য শতাংশের কাছাকাছি নেমে এসেছে। অপুষ্টির কারণে শিশুদের এক-তৃতীয়াংশের শারীরিক বৃদ্ধি ব্যহত হচ্ছে।

জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (এফএও) সহযোগিতায় প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) আয়োজিত বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে পুষ্টি সংবেদনশীল সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক ওয়েবিনারে (অনলাইন সেমিনার) মূল প্রবন্ধে এফএও’র ন্যাশনাল পোভার্টি অ্যান্ড সোস্যাল প্রোটেকশান অ্যাডভাইজর অধ্যাপক মিজানুল হক কাজল সোমবার এ তথ্য জানান।

মোহাম্মদ মিজানুল হক কাজল আরো জানান, ৩ শতাংশ পরিবারের কোনো খাবার নেই, ১৬ শতাংশ পরিবারের ১ থেকে ৩ জনের খাবার আছে এবং ২২ শতাংশ পরিবারের ৩০ দিন বা তার অধিক সময়ের খাবার আছে। এ পরিস্থিতিতে সামাজিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি করোনাকালে ব্র্যাক পরিচালিত সমীক্ষা প্রতিবেদন থেকে বলেন, সরকার ২০১৫ সালে জাতীয় সামাজিক সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল গ্রহণ করে এবং এই কৌশলে বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা পুনগঠন করার লক্ষ্যে জীবন-চক্র প্রদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে তিনি সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের কিছু দূর্বলতাও তুলে ধরেন। দূর্বল নজরদারী ও পর্যবেক্ষণের কারণে উপকারভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দ্বৈততা পরিহার সংক্রান্ত ত্রুটি হয়েছে। যে পরিমাণ অর্থ বা ভাতা প্রয়োজন তা দরিদ্র মানুষের কাছে সঠিকভাবে পৌছানো যাচ্ছে না। বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতার অপ্রতুলতাও বিদ্যমান।

পিআইবি মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পিআইবি পরিচালক (অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ) মো. ইলিয়াস ভূইয়া। আলোচনায় অংশ নেন এফএও’র মিটিং দ্যা আন্ডার নিউট্রেশন চ্যালেঞ্জ প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার নাওকি মিনামিগুচি।

পিআইবি মহাপরিচালক বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে সুষম খাদ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাব রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে সাথে পুষ্টিহীন জনসংখ্যার হার কমলেও এখনো অসংখ্য শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।

তিনি আরো বলেন, জনগণকে পুষ্টিকর খাবার দিতে না পারলে বিকলাঙ্গ ভবিষ্যৎ ও বিকলাঙ্গ সমাজ গড়ে ওঠবে।

নাওকি মিনামিগুচি বলেন, পুষ্টি সংবেদনশীল খাদ্য ব্যবস্থা বিষয়ক সেকেন্ড কান্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান বাস্তবায়নের অন্যতম স্তম্ভ হচ্ছে সামাজিক সুরক্ষা। তিনি তার বক্তব্যে খাদ্য নিরাপত্তার চারটি দিক তুলে ধরেন। এগুলো হচ্ছে-খাদ্যের পর্যাপ্ততা, প্রাপ্যতা, খাদ্যের যথার্থ ব্যবহার এবং এ তিনটি বিষয় নিশ্চিত করা।

অর্ধবেলার এ ওয়েবিনারে আলোচনায় অংশ নেন মিটিং দ্যা আন্ডার নিউট্রেশন চ্যালেঞ্জ প্রকল্পের জাতীয় পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ওয়াজিয়া খাতুন, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমদ, দৈনিক প্রথম আলোর বিশেষ সংবাদদাতা শিশির মোড়ল, এগ্রিকালচারাল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আশরাফ আলী, কালের কণ্ঠের ডেপুটি চিফ রিপোর্টার তৌফিক মারুফ, দৈনিক জনকণ্ঠের সিটি এডিটর কাউসার রহমান, এসএটিভি’র বিশেষ প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন আহমদ বাবলু, নয়া দিগন্তের সিনিয়র রিপোর্টার হামিম উল কবির প্রমুখ।

ওয়েবিনারে স্বাস্থ্য ও কৃষি বিটের ৩৫ জন সংবাদকর্মী অংশ নেন। সেমিনারের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন পিআইবি সিনিয়র প্রশিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ আবদুল মান্নান।

Originally posted 2020-08-25 08:26:36.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *