
করোনা মোকাবিলায় কোন পথে মোদি-ইমরান

‘ভারতের অর্থনীতি অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে’
জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ ভারত। একশ সাঁইত্রিশ কোটির বেশি জনগণ নিয়ে দেশটি করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। লকডাউনের সময় জনবহুল এ দেশটিতে অর্থনীতির চাকা চালু রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে কখনই নরম সুর দেখা যায়নি। গরিবদের জন্য অর্থ বরাদ্দসহ নানা বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তিনি। গতকালও তার কণ্ঠে সেই তেজদীপ্ত কথাই শোনা গেল।
তিনি বলেছেন, ভারতের অর্থনীতি অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে। গতকাল মঙ্গলবার কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের (সিআইআই) ১২৫ বছর উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে দেশীয় সংস্থাগুলোকে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠার বার্তা দিয়েছেন। এই কাজে সিআইআইকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের দিকে তাকিয়ে দেশের শিল্প সংস্থাগুলোকে উৎপাদনের কথা বলেছেন মোদি। সেই সঙ্গে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখার বার্তাও দিয়েছেন। দেশে প্রথম দফায় ‘আনলকডাউন’ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম অর্থনীতি নিয়ে এই প্রথম বক্তব্য রাখলেন মোদি। মোদি বলেন, আত্মনির্ভর ভারতের হাত ধরে অর্থনীতি ঘুড়ে দাঁড়াবে। প্রধানমন্ত্রীর গরিব কল্যাণ যোজনায় এ পর্যন্ত ৭৪ কোটি মানুষ সুবিধা পেয়েছেন।
ভারতে বর্তমানে করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। সম্প্রতি দেশটিতে দৈনিক প্রায় আট হাজার লোক নতুন করে সংক্রামিত হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত ভারতে সর্বমোট সংক্রমিত হয়েছেন প্রায় দুই লাখ। আর মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬০০-র বেশি মানুষ। তবে গত শনিবার লকডাউন শিথিল করার পর বেশ কয়েক জন বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, ভারতে সংক্রমণের হার আরও বাড়তে পারে। হিন্দুস্তান টাইমস।
‘করোনাকে সঙ্গী করেই বাঁচতে হবে’
ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ পাকিস্তান করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই বলে আসছে, তারা গোটা দেশ লকডাউন করতে পারবে না। দরিদ্র মানুষের কথা ভেবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান লকডাউনের পক্ষে পদক্ষেপ নেননি। তার পরও সংক্রমণ যখন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছিল সেই সময় তিনি লকডাউনের মতো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, যদিও পরবর্তীতে সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যেই লকডাউন তুলে নেয়ারও ঘোষণা দেন তিনি।
এর মধ্যেই সম্প্রতি ইমরান খান বলেছেন, করোনাকে সঙ্গী করেই বাঁচতে হবে। ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে করোনা ভাইরাসের কারণে জারিকৃত লকডাউনের সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে পাকিস্তান। খুব শিগগির দেশটির পর্যটন খাত তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। তবে সিনেমা হল, থিয়েটার ও স্কুল বন্ধই থাকবে। ২২ কোটি মানুষের দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭২ হাজার ১৬০ জনকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৫৪৩ জন। করোনায় থমকে যাওয়া পাকিস্তানের অর্থনীতিতে ধাক্কা এসেছে রপ্তানি, রাজস্ব ও রেমিট্যান্স খাত থেকে। আগামী কয়েক মাসে দেশটির রাজস্ব ও রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে ইমরান খান বলেছেন, লকডাউনের কারণে যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা অন্যান্য দেশের মতোই তার ভার বহন করতে পারবে না পাকিস্তান।
দেশটির দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ৫ কোটি ও দিনমজুর শ্রেণির আড়াই কোটি মানুষের দুর্দশার কথা উল্লেখ করে পাক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সরকার নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু এত ব্যাপকসংখ্যক মানুষের জন্য এই সহায়তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
Originally posted 2020-06-03 05:36:42.