করোনা নিয়ে কয়েকটি সুখবর

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধীরে ধীরে লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে এবং মানুষ দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে কর্মক্ষেত্রে ফিরতে শুরু করেছেন। মহামারি পরবর্তী কর্মক্ষেত্র কেমন হবে সেটি নিয়ে অনেকেই চিন্তিত।

পেশাদার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অফিসে একমুখী করিডোর, বিশেষ জায়গাগুলোতে রঙিন কার্পেট বা ডেস্কের চারপাশে টেপ দিয়ে পৃথক করা, সহকর্মীদের কাশি এবং হাঁচি থেকে বাঁচার জন্য পরিষ্কার প্লাস্টিকের স্ক্রিন দিয়ে ডেস্ক আলাদা করে ফেলা হতে পারে।

সাংগঠনিক মনোবিজ্ঞানী ব্র্যাড বেল বলেন, অফিসের এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়াটা হতে পারে কষ্টকর। এমনকি তা অফিসের কর্মীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাবও ফেলতে পারে।

রেমডিসিভিরের মূল্য নির্ধারণ

বাংলাদেশের বৃহৎ ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস চলতি মাসে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ রেমডিসিভিরের উৎপাদন শুরু করছে; করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এই ওষুধ চমকপ্রদ ফল দিয়েছে।

বেক্সিমকোর চিফ অপারেটিং কর্মকর্তা রাব্বুর রেজা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তারা এই ওষুধটির প্রত্যেক শিশির দাম ৫৯ থেকে ৭১ ডলার নির্ধারণের পরিকল্পনা করছেন। করোনা আক্রান্ত একজন রোগী সুস্থ হওয়ার জন্য তার চিকিৎসায় কমপক্ষে ৫ থেকে ১১ শিশি রেমডিসিভিরের প্রয়োজন হয়।

মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী জায়ান্ট কোম্পানি জিলিডের প্যাটেন্টকৃত এই ওষুধটি স্বল্প-উন্নত দেশগুলো বিশেষ শর্তে উৎপাদন করতে পারে। জাতিসংঘের বিশ্ব বাণিজ্য বিধি অনুযায়ী, বাংলাদেশসহ বিশ্বের স্বল্প উন্নত দেশগুলো এ ধরনের প্যাটেন্ট মানতে বাধ্য নয়। এছাড়া ওষুধটি উৎপাদন করে অন্য স্বল্প উন্নত দেশগুলোতে তা রফতানি করতে পারবে।

নিয়ম অনুযায়ী, বাংলাদেশ এই ওষুধটি স্বল্প-উন্নত পাঁচটি দেশে রফতানি করার অনুমতি পাবে। তবে নিজ দেশে সরবরাহ অগ্রাধিকার পাবে বলে বেক্সিমকোর ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

শিগগিরই পাওয়া যাবে ভ্যাকসিন অথবা চিকিৎসা

বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিলেও করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক কিংবা ভ্যাকসিন এখনও আবিষ্কার হয়নি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একশ’র বেশি গবেষণা প্রকল্পে করোনার ভ্যাকসিন, প্রতিষেধক তৈরির কাজ চলমান রয়েছে।

করোনার চিকিৎসায় যুগান্তকরী অগ্রগতির দাবি করেছেন ইসরায়েলের বিজ্ঞানীরা। দেশটির প্রধান জীবাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা নভেল করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরিতে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ সাধন করেছেন বলে জানিয়েছেন। গবেষকরা অ্যান্টিবডি তৈরির প্রথম পর্বের কাজ শেষে করোনার সম্ভাব্য এই চিকিৎসা পদ্ধতির প্যাটেন্ট এবং গণহারে উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

তারা বলেছেন, এই অ্যান্টিবডি রোগীর শরীরে একচেটিয়াভাবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং এটিকে নিস্ক্রিয় করে ফেলে।

এদিকে, মঙ্গলবার সায়েন্স টাইমস ম্যাগাজিনে ইতালীয় গবেষকদের একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রোমের স্প্যালানজানি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞরা করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন। এটি ইঁদুরের শরীরে প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়া গেছে, তা মানুষের শরীরেও করোনা দূর করতে সক্ষম হবে। এই গ্রীষ্মের পরই ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের ছাড়পত্র পাবে বলে আশা করেছেন ইতালির বিজ্ঞানীরা।

জার্মান ফার্মাসিটিউকাল কোম্পানি বায়োএনটেক ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি ফাইজার করোনার সম্ভাব্য একটি ভ্যাকসিন চলতি বছরের শেষের দিকে বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনার সম্ভাব্য যে ৮টি ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে তার মধ্যে এটি অন্যতম।

Originally posted 2020-05-06 19:17:15.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *