ইয়েমেনের এডেন বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ; মৃত অন্তত ২২

উত্তর ইয়েমেনের শহর এডেনের বিমানবন্দর কেঁপে উঠল বিস্ফোরণে। ঠিক সেই সময় যখন সৌদি আরব থেকে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা দেশে ফিরেছেন। তাঁরা বিমান থেকে নামার সময়েই বিস্ফোরণ হয়। তবে সরকারি বিমানে থাকা মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের কেউ হতাহত হননি।

বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এডেনের মাশেক প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসেও বিস্ফোরণ হয়। সেখানে তখন প্রধানমন্ত্রী মইন আব্দুল মালিক সহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা এবং সৌদি রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তাঁদের দ্রুত নিরাপদ এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এই জোড়া বিস্ফোরণ কারা ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি। কোনো সংগঠন এখনো পর্যন্ত দায় নেয়নি। তবে তথ্যমন্ত্রী মোয়াম্মার আল-ইরিয়ানি বলেছেন, এটা হলো ইরানের সাহায্যপ্রাপ্ত হুতি বিদ্রোহীদের কাজ। তিনি বলেছেন, ”আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করে জানাচ্ছি, মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তারা নিরাপদে আছেন। এই বিস্ফোরণ দেশের কাজ করা থেকে আমাদের থামাতে পারবে না।”

বিস্ফোরণের সময় সংবাদসংস্থা এএফপি-র সাংবাদিক বিমানবন্দরে ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার সদস্যরা যখন বিমান থেকে বের হচ্ছিলেন, তখন বিস্ফোরণ হয়। তাঁর মতে, একটা নয় দুইটি বিস্ফোরণ হয়েছে।

সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় ইয়েমেনের নতুন সরকার গঠিত হয় গত ১৮ ডিসেম্বর। এই সরকারে উত্তর ও দক্ষিণ ইয়েমেন থেকে সমান সংখ্যক মন্ত্রী নেয়া হয়েছে। আমিরাতের সমর্থনপুষ্ট দক্ষিণ ইয়েমেনের ট্রান্সিশনাল কাউন্সিল এবং সৌদি আরবের সমর্থনে থাকা প্রেসিডেন্ট হাদির সমর্থকরা সমঝোতায় আসায় এই সরকার গঠন সম্ভব হয়েছে। এর ফলে এই দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের লড়াই বন্ধ হয়েছে। দুই পক্ষ একজোট হয়ে হাউথি বিদ্রোহীদের মোকাবিলা করবে বলে ঠিক হয়েছে।

এই নতুন সরকার রিয়াধে গঠিত হয়। ঠিক হয়েছে, এই সরকার হাউথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাবে। হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৪ সালে ইয়েমেনের রাজধানী শহর দখল করে নিয়েছে। তখন থেকে প্রেসিডেন্ট হাদি রিয়াধেই ছিলেন।

রিয়াধ থেকে এডেনে পা দিতেই এই বিস্ফোরণ হলো। তার থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সরকারের সামনের পথ কতটা কঠিন। এই বন্দর শহরে অতীতে আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত সরকারের সঙ্গে আমিরাত সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রবল সংঘর্ষ হয়েছে। গত বছর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটিতে হাউথিরা রকেট আক্রমণ চালায়। তাতে অনেকে মারা গেছিলেন।
(এেফপি, এপি, রয়টার্স)

Originally posted 2020-12-31 21:17:37.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *