ইসরায়েলের কারণে ফিলিস্তিনের নির্বাচন স্থগিত!

আগামী মাসে ফিলিস্তিনের সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট মাহমাদ আব্বাস নির্ধারিত নির্বাচন স্থগিত করেছেন।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ইসরায়েল অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম বসবাস করা ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের ভোট দেয়া বিতর্ক এবং তার রাজনৈতিক দল ফাতাহ’র অভ্যন্তরীণ বিভাজনের কারণে নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন।

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘অনুষ্ঠিত হতে চাওয়া নির্বাচনে ইসরায়েল ভেটো দিয়েছিল। নির্বাচন বন্ধের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইসরায়েলের ভেটো সফল হলো। তবে নির্বাচন বন্ধের সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও উপকৃত হবেন। কারণ, হামাসের প্রভাবের কাছে তার রাজনৈতিক দল ফাতাহ ক্ষমতা হারানোর আশঙ্কা করছিল।

গতকাল ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ইসরায়েলকে দোষারোপ করে বলেন, জেরুজালেম এবং দখলকৃত গাজা উপত্যকায় তারা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে দিবেন কি না সেটা অনিশ্চিত। এর তিন মাসে আগে ১৫ বছরের ইতিহাসে ফিলিস্তিনে প্রথম সংসদীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। তার প্রেসিডেন্ট পদসহ ফিলিস্তিনের প্রতিষ্ঠানসমূহের গণতান্ত্রিক বৈধতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর তিনি ওই ঘোষণা দেন। ধারণা করা হচ্ছিল, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে দীর্ঘদিনের যে বিভেদ, তা দূর করতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু সেটা ব্যর্থ হচ্ছে।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আব্বাসের প্রধান অভ্যন্তরীণ প্রতিদ্বন্দ্বী গাজা অঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের জয় লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। ২০০৬ সালে হামাস দলীয়ভাবে বিভক্ত ফাতাহকে পরাজিত করতে সুসংগঠিতভাবে প্রচারণা চালিয়েছিল।

গতকাল শুক্রবার দলীয় একটি অংশের সঙ্গে আলোচনার পর প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস নির্বাচন স্থগিতের জন্য মূলত জেরুজালেম বিতর্কের কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখী হওয়ার কারণে আমরা সংসদীয় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করছি। জেরুজালেম এবং অঞ্চলটির মানুষের ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত থাকবে।’

পূর্বের নির্বাচনে ইসরায়েল দখলকৃত পূর্ব জালেমের কয়েক হাজার জনগণকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ভোট দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু এবার ইসরায়েল বলছে, ফিলিস্তিনিদের আবেদন মঞ্জুর করার জন্য তাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষ (সরকার) নেই।

তবে যাদেরকে ইসরায়েলের অনুমতিক্রমে ভোট দিতে হবে নির্বাচনের ফলাফলে তাদের বড় কোনো প্রভাব পড়বে না। যদিও পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনিদের এটা দাবি করতে প্রতীকীভাবে তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ।

আল জাজিরার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে রাজনৈতিক বিজ্ঞানী হাসান আয়ুব ইসরায়েল উল্লেখিত কারণ প্রত্যাখান করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভোটের অনুমতি আদায় করতে ভিন্ন উপায় আছে। কিন্তু ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এ বিষয়ে ইসরায়েলকে চাপ প্রয়োগ করতে ইচ্ছুক নন।

Originally posted 2021-05-01 15:37:05.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *