শিগগিরই ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাচ্ছে বাংলাদেশ

বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স থেকে শিগগিরই বাংলাদেশ ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সোমবার (১২ এপ্রিল) সকালে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মাসিং মিয়াং টেম্বন। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংস্থাটির সিনিয়র ইকোনমিস্ট বানার্ড হ্যাভেন।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ভারত থেকে ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছে। আরও আড়াই কোটি ডোজ কেনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।

ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে মার্সি মিয়াং টেম্বন বলেন, ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিয়ে বৈশ্বিকভাবে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে বাংলাদেশ কোভ্যাক্স থেকে ভ্যাকসিন খুব শিগগির পাবে।

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের ভ্যাকসিন কিনতে অর্থের কোনো সমস্যা নেই। বিশ্বব্যাংকও ৫০ কোটি ডলার দিতে যাচ্ছে, যা দিয়ে দেশের তিন ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন কেনা যাবে। এ ছাড়া বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স’র সঙ্গে বিশ্বব্যাংকও রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে।

তবে যদি চলমান ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম অব্যাহত থাকে, কঠোর লকডাউন কার্যকর হয় এবং দ্রুত বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ায়, তা হলে এ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতি, রপ্তানি, শক্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং চলমান টিকাদান কর্মসূচির কারণে পুনরুদ্ধারের লক্ষণ প্রদর্শন করছে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রবৃদ্ধি গতি কমিয়ে দিয়েছিল। যেটি দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো দারিদ্র্য হ্রাসের প্রবণতাটি বিপরীত হয়ে যায়।

আশার কথা হলো— অর্থনীতি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার করছে। অর্থবছরের প্রথমার্ধে কারখানাগুলো পুনরায় খোলা হয় এবং রপ্তানি পুনরায় শুরু হয়। তবে চলমান কোভিড-১৯ মহামারির পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনীতি উচ্চতর ঝুঁকির মুখোমুখি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কোভিড ১৯-এর কারণে তৈরি অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। পুনরুদ্ধারের গতি বেশিরভাগের ওপর নির্ভর করে দ্রুত টিকা কীভাবে অর্জন করা যায়। মুদ্রাস্ফীতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি থাকতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, একটি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দেরি হলে আরএমজি পণ্যগুলোর চাহিদা হ্রাস করতে পারে এবং অভিবাসী শ্রমিকদের কাজের সুযোগ সীমাবদ্ধ করতে পারে। কোভিড-১৯ মহামারি আর্থিক খাতের ঝুঁকিকে আরও তীব্রতর করেছে। যেহেতু খেলাপি ঋণ এবং ব্যাংক পরিচালনা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা রয়েছে। সরবরাহ কর্মক্ষমতা উন্নত করার মাধ্যমে পুনরুদ্ধার গতি এবং প্রতিযোগিতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

প্রতিবেদনে ব্যবসার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে এবং স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করতে লজিস্টিক সিস্টেমকে আধুনিকীকরণের সুযোগগুলোর রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। লজিস্টিক দক্ষতা বাড়াতে সিস্টেম বা কৌশলের মাধ্যমে এটি অর্জন করা যেতে পারে। অবকাঠামোর মান, ক্ষমতা ও পরিচালনা উন্নতি, সরবরাহ পরিষেবাদির মান বৃদ্ধি এবং সংহতকরণ উন্নত করা ও আঞ্চলিক সরবরাহ পরিষেবাগুলোর একটি বিরামবিহীন সংহত অর্জন জরুরি।

Originally posted 2021-04-13 06:55:36.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *