বিদায় মারাদোনা

সমাহিত হলো মারাদোনার দেহ। তার আগে হাজারো মানুষ চোখের জলে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানালেন তাঁকে।
তাঁর কফিন জড়িয়ে রয়েছে আর্জেন্টানার সাদা-নীল জাতীয় পতাকা। তার উপর রাখা জাতীয় দলে খেলা সেই বিখ্যাত ১০ নম্বর জার্সি, যা পরে তিনি তাঁর পায়ের জাদু দেখিয়েছেন বিশ্বকাপে। ফুটবলের মুকুটহীন সম্রাটের দেহ এভাবেই শায়িত ছিল প্রেসিডেন্ট প্যালেসে।

আর শেষবারের মতো তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে লাইনে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার মানুষ। যে দেশে ফুটবল হচ্ছে ধর্ম, সেখানে ফুটবল সম্রাটের অকাল বিদায়ে সকলে শোকস্তব্ধ। তাঁদের চোখের জল বাঁধ মানছে না। অনেকে কফিনবন্দি মারাদোনার দেহ দেখার শোক সামলাতে পারছেন না। এমনই একজন ৩৬ বছর বয়সী লুসিয়ানো পেরেজ মারাদোনাকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে বেরিয়ে আসার পর সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ”আমি মারাদোনাকে কফিনে শায়িত অবস্থায় দেখতে চাইনি। ভয়ঙ্কর দৃশ্য।” অন্যরা কফিনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় চোখের জল সামলাতে পরেননি। সজল চোখে প্রার্থনা করে গেছেন।

রাস্তায়, স্টেডিয়ামের আশপাশে, প্যালেসে হাজার হাজার মানুষ। শোকার্ত। বোকা জুনিয়ার্সের স্টেডিয়ামের সামনে মানুষ মোমবাতি জ্বালিয়ে যাচ্ছেন। রেখে যাচ্ছেন ফুল। প্রার্থনা করছেন। বিষাদ গ্রাস করেছে তাঁদের।

পরে তাঁর দেহ সমাহিত করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শুধুমাত্র মারাদোনার আত্মীয় ও খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই।

তবে প্রেসিডেন্ট প্যালেসে এত মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন যে, সরকার প্রথমে ঘোষণা করে, সেখানে দেহ রাখার সময়সীমা তিন ঘণ্টা বাড়ানো হবে। কিন্তু ভক্তরা অধৈর্য হয়ে পড়েন। তাঁরা প্যালেসের চত্বরে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়েন। পুলিশ তখন লাঠি চালায় ও রবার বুলেটও মারে।

এই ঘটনার পর সময়সীমা আর বাড়ানো হয়নি। তবে বুয়েনস আইরেসের শহরের পথে পথে ঘোরানো হয় মারাদোনার কফিনবন্দি দেহ। তবে শহরের মূল সড়কে হাজারো লোক অপেক্ষা করছিলেন। সেখানে আর নিয়ে যাওয়া হয়নি মারাদোনার কফিন। বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে শহরের সামান্য বাইরে সমাধিক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। কিন্তু সমাহিত করার অনুষ্ঠানে পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাইরে কোনো মানুষকে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

Originally posted 2020-11-28 05:43:57.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *