ফ্রান্সে ইসলামিক প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন আইন

ফ্রান্সে ইসলামিক প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন আইন ঘোষণা করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। যা ১৫ দিনের মধ্যে গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চরমপন্থী ইসলাম সমর্থকদের প্রতিহত করার জন্য নতুন একটি চার্টার প্রকাশিত করলেন এমানুয়েল মাক্রোঁ। চার্টার অফ রিপাবলিকান ভ্যালুস নামের ওই নির্দেশপত্র ১৫ দিনের মধ্যে গ্রহণ করতে হবে ফরাসি ইমামদের। এবং তা যাতে সকলে মেনে চলেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

গত বুধবারই প্যারিসের রাজপ্রাসাদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ফ্রেঞ্চ কাউন্সিল অফ দ্য মুসলিম ফেইথ (সিএফসিএম)-এর কয়েকজন বিশিষ্ট সদস্যকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন মাক্রোঁ। সেখানেই চার্টারের বিভিন্ন পয়েন্ট নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়। তারপরেই চার্টারটি প্রকাশ করে মাক্রোঁর সরকার। বলা হয়েছে, মুসলিম নেতা এবং ইমামদের ১৫ দিনের মধ্যে ওই চার্টার গ্রহণ করতে হবে। চার্টার অনুযায়ী, প্রত্যেক ইমামকে এখন থেকে একটি সংশাপত্র বা অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দেওয়া হবে। যাঁদের কাছে ওই কার্ড থাকবে, তাঁরাই একমাত্র ইমাম হিসেবে কাজ করতে পারবেন। যে কোনো সময় ওই কার্ড কেড়ে নেওয়ার অধিকার থাকবে রাষ্ট্রের।

গত ২১ অক্টোবর প্যাটিকে মরনোত্তর লিজিয়ন অফ অনারে ভূষিত করে প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ বলেন, ”আমরা কার্টুন ছাড়বো না৷ ইউরোপীয় গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধকে রক্ষা করতে গিয়ে প্যাটি জীবন দিয়েছেন । তিনি এই প্রজাতন্ত্রের মুখ।”

মাক্রোঁ সরকারের বক্তব্য, চরমপন্থী ইসলাম প্রতিহত করার জন্যই এই ব্যবস্তাগুলি করা হচ্ছে। চার্টারে স্পষ্ট করে বলা আছে, ইসলাম একটি ধর্ম, কিন্তু তা যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত না হয়। কেউ যদি তা করার চেষ্টা করেন, তা হলে রাষ্ট্র তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আরো একটি কথা উল্লেখ করা হয়েছে চার্টারে। বিদেশের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে হবে ইসলামিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আরব বিশ্ব থেকে ইসলামিক প্রতিষ্ঠানগুলি যে সাহায্য পায়, তার উপর কড়াকড়ি জারি করার জন্যই চার্টারে এই পয়েন্টটি লেখা আছে।

ফরাসি সংবাদ সংস্থাকে সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে সিএফসিএম চার্টার মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছে। তবে মাক্রোঁ জানিয়ে দিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে মুসলিম সমাজকে তা গ্রহণ করতে হবে।

সম্প্রতি ফ্রান্সের এক স্কুল শিক্ষককে হত্যা করা হয়। অভিযোগ, স্কুলে তিনি বাকস্বাধীনতার কথা বোঝাতে গিয়ে মহানবীর (সা:) বিতর্কিত কার্টুন দেখিয়ে ছিলেন। শুধু তাই নয়, ফ্রান্সের একটি গির্জাতেও আক্রমণ চালায় চরমপন্থীরা। তারপরেই নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়। মাক্রোঁ চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেন। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ফ্রান্সে বাকস্বাধীনতা রয়েছে। এবং তাতে কোনো ভাবেই তিনি কাউকে হস্তক্ষেপ করতে দেবেন না। চরমপন্থী ইসলামের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কড়া অবস্থান গ্রহণ করেন তিনি। যার জন্য মুসলিম বিশ্বে তাঁকে সমালোচনার মুখোমুখিও হতে হয়। নতুন চার্টার নিয়েও যথেষ্ট বিতর্কের সম্ভাবনা আছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

Originally posted 2020-11-21 05:36:08.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *