ঢাকায় মশা মারতে নামছে ব্যাঙ

বেরসিক মশার তাণ্ডবে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী। দিন যায় রাত আসে মশা কভু যায় না। সিটি করপোরেশন পক্ষ থেকে যতোই চেষ্টা চালানো হোক না কেন। মশারাও পরিকল্পনা মাফিক নগরবাসীর রক্ত চুষে খাচ্ছে।

এবার নিষ্ঠুর মশা মারতে ঢাকার জলাশয়ে ব্যাঙ ছাড়তে শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

জানা গেছে, একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প হিসেবে দশটি জলাশয়ে হাজার দশেক ব্যাঙাচি অর্থাৎ ব্যাঙের পোনা ছাড়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী জানান, ব্যাঙের পোনাগুলোকে জলাশয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে, আমরা আশা করছি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই পোনা পূর্ণাঙ্গ ব্যাঙে রূপান্তরিত হবে তখন তারা মশার লার্ভা খেয়ে ফেলতে শুরু করবে।

তিনি আরও জানান, মূল পরিকল্পনা হচ্ছে এই ব্যাঙাচি পূর্ণাঙ্গ ব্যাঙ হবে এবং তারা বংশবিস্তার করবে, এবং মশার লার্ভা খেয়ে ক্রমে তারা মশার বিস্তার ঠেকিয়ে দেবে।

এর আগেও মশার কামড় থেকে জনগণকে রক্ষায় করপোরেশনগুলোকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়। অতীতে তারা জলাশয়ে গাপ্পি মাছ, হাঁস, তেলাপিয়া মাছ ইত্যাদি ছেড়ে মশা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছিল।

তবে মশা মারতে তা কতটুকু সক্ষম হয়েছিল সেই প্রশ্ন থেকেই গেছে।

প্রশ্ন উঠেছে কীভাবে মশা মারবে ব্যাঙ? এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী বলেছেন, সিটি কর্পোরেশন মূলত চারভাবে মশা নিধন করে। মশার জন্মের উৎস ধ্বংস করে, জৈবিক পদ্ধতিতে মানে অন্য কোনো প্রাণীকে দিয়ে লার্ভা নির্মূলের ব্যবস্থা করে, ওষুধ ছিটিয়ে এবং ফগার মেশিন দিয়ে ধোঁয়া ছিটিয়ে।

তার মধ্যে জৈবিক পদ্ধতি হচ্ছে, খাল, জলাশয়, নালাসহ বিভিন্ন বদ্ধ জলাশয়ে অন্য প্রাণী বিচরণের ব্যবস্থা করা।

এতে ওই সব প্রাণী যারা ছোটখাট পোকামাকড় খেয়ে জীবনধারণ করে, তাদের খাবারের তালিকায় মশা ও তাদের লার্ভা যুক্ত হলে, মশা বংশবিস্তার করতে পারবে না। ফলে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেই মশা নিধন হবে।

মূলত বদ্ধ জলাশয়ে পানিপ্রবাহ খুব একটা না থাকায় এসব স্থানে দ্রুত মশার বংশবিস্তার ঘটে।

তিনি আরও জানান, ঢাকা দক্ষিণে সরকারি জলাশয়ের সংখ্যা ১০টি, তার সব কটিতেই ব্যাঙ ছাড়া হয়েছে। এ কার্যক্রমে সফল হলে পরবর্তীতে বেসরকারি জলাশয়েও ব্যাঙ ছাড়া হবে।

এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক কবিরুল বাশার বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে যেকোনো কিছুই করা যেতে পারে। তবে গবেষক হিসেবে আমি মনে করি ঢাকা শহরের পানি প্রচণ্ড দূষিত। ফলে ব্যাঙের পোনা বেঁচে না থাকারই কথা। আর যদি বেঁচেও থাকে তার পরে সেগুলো মশা মারার জন্য কতটা সক্ষম থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

সূত্র : বিবিসি।

Originally posted 2021-03-21 19:55:32.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *