ডেক্সামেথাসন নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন নির্দেশনা

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) রোগীদের ক্ষেত্রে দামে সস্তা ও সহজলভ্য স্টেরয়েড ডেক্সামেথাসনের ব্যবহারের বিষয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলেছে, জীবন রক্ষাকারী এই ওষুধটি শুধুমাত্র সেসব কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা উচিত, যাদের অবস্থা গুরুতর।

বুধবার (১৭ জুন) এমন নির্দেশনা দেন সংস্থাটির প্রধান অ্যাধানম গেব্রিয়েসাস। তিনি বলেন, অবশেষে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে গবেষণা, যখন কি-না এই ভাইরাসটি কেড়ে বিশ্বের চার লাখেরও বেশি প্রাণ। আক্রান্ত হয়েছে ৮০ লাখের বেশি।

করোনাভাইরাসের হাত থেকে জীবনরক্ষাকারী ‘প্রথম ওষুধ’ ডেক্সামেথাসনে আশার আলো দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। মঙ্গলবার ডেক্সামেথাসনকে করোনা রোগীদের ‘জীবনরক্ষাকারী ওষুধ’ বলে ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। ফলে ওষুধটি দামে সস্তা হলেও পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দেশগুলো। যদিও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে যথেষ্ট পরিমাণ মজুত রয়েছে ডেক্সামেথাসন। তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কিছু চিকিৎসক। এ বিষয়ে আরও তথ্য-উপাত্ত চেয়েছেন তারা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমার্জেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইক রায়ান বলেছেন, যেসব দেশে এই ওষুধটি ব্যবহারের উপকারিতা পাওয়া গেছে, তাদের উচিত এটা শুধু গুরুতর কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা। তিনি এক ব্রিফিংয়ে আরও বলেন, করোনা উপশমের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রয়েছ ডেক্সামেটাসনের। তাই যারা কোভিড আক্রান্ত হয়ে গুরুতরভাবে ভুগছেন এবং অবস্থা সংকটাপন্ন, শুধু তাদের জন্যই এই ওষুধ সংরক্ষণ করে রাখা উচিত।

গবেষকরা বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কম ডোজের স্টেরয়েড এই চিকিৎসা একটি বড় ধরনের অগ্রগতি। ভেন্টিলেটরে থাকা করোনা রোগীদের মৃত্যুর হার এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনে ওষুধটি। এছাড়া যারা অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন; তাদের মৃত্যুর হার এক-পঞ্চমাংশ কমিয়ে আনে।

বলা হচ্ছে, যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস মহামারির শুরুর দিকে যদি ওষুধটি পাওয়া যেত, তাহলে সেখানে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হতো।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, ‘এটা খুবই ভালো খবর। আমি যুক্তরাজ্য সরকার, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং অসংখ্য হাসপাতাল ও রোগীদের অভিনন্দন জানাই, যারা জীবনরক্ষাকারী এ আবিষ্কারে অবদান রেখেছেন। অক্সিজেন বা ভেন্টিলেটর সাপোর্টে থাকা কোভিড-১৯ রোগীদের মৃত্যুহার কমানোয় প্রথমবারের মতো কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে এই চিকিৎসা।’

জাতিসংঘের সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা ডেক্সামেথাসনের বিষয়ে আরও জানতে শিগগিরই বিশদভাবে বিশ্লেষণ শুরু করবে। পাশাপাশি, করোনার চিকিৎসা বিষয়ক তাদের নির্দেশিকাও সংশোধন করা হবে।

ইতোমধ্যে ওষুধটির মজুত বাড়িয়েছে যুক্তরাজ্য। এছাড়া প্রায় আড়াই লাখ ডোজের অর্ডার রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক। সূত্র : চ্যানেলনিউজএশিয়া

Originally posted 2020-06-18 11:51:28.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *