ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বুড়ো শাসক’ বললেন খামেনি

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ নীতির কাছে কখনোই মাথা নোয়াবে না তেহরান। ওয়াশিংটনের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয় বলেও সাফ জানিয়েছেন তিনি। বলেন, পরমাণু কার্যক্রম আরো বিস্তৃত পরিসরে উন্নয়ন শুরু করবে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান।

শুক্রবার (৩১ জুলাই) ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান অনুযায়ী পরমাণু ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা, নভেম্বরে মার্কিন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা ত্বরান্বিত করবে। এ আলোচনার প্রস্তাব শুধু ট্রাম্পকে পুনর্নির্বাচিত করার লক্ষ্যেই দেয়া হয়েছে।

ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে খামেনি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে ফায়দা লুটতে চেয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের শাসকের দায়িত্বে থাকা বৃদ্ধ লোকটি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনাকে শুধুমাত্র প্রচারের জন্য ব্যবহার করেছেন। পরমাণু নিয়ে তার অধিকাংশ কূটনীতিই সফল হয়নি।

মধ্যপ্রাচ্যে ছায়াযুদ্ধে জড়িত মিলিশিয়া গ্রুপগুলোর সঙ্গে ইরান মিত্ররা বজায় রাখবে বলেও জানান খামেনি। ট্রাম্প প্রশাসনের চাওয়া ছিল ইরান যাতে ওই গ্রুপগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। এক্ষেত্রেও আলোচনা প্রত্যাখ্যানের মতো ওয়াশিংটনের আহ্বান উড়িয়ে দিল ইরান।

গেলো মাসে ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘ইরান চাইলে ভালো একটি চুক্তি হতে পারে। নভেম্বরে নির্বাচনের আগেই। বিশাল চুক্তির জন্য নির্বাচন শেষ হওয়ার অপেক্ষায় থাকার কোনা দরকার নেই। নির্বাচনে আমিই জয়ী হতে চলেছি। আপনারা চাইলে এখনোই ভালো একটি চুক্তি সম্পাদন করতে পারেন।’

নির্বাচনের সঙ্গে আলোচনাকে জড়িয়ে ট্রাম্পেই প্রথম বক্তব্য দেন। তারপর ইরান, সেই বক্তব্যের জবাব দিয়ে চলেছে।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে করা ৬ জাতিগোষ্ঠীর পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে সরে দাঁড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। তারপর থেকে তেহরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ জোরদার করে ওয়াশিংটন। শুরু করে ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগনীতি’ প্রচারণা। যার কারণে চরম আর্থিক সঙ্কটে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটি।

বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, ইরানের পরমাণু, সামরিক বাহিনী এবং দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রমে ব্যবহার হচ্ছে এমন সন্দেহজনক ২২টি ধাতু দেশটিতে রফতানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ইরান কখনো আলোচনার চেষ্টা করবে না। নিষেধাজ্ঞা আমাদের অভ্যন্তরীণ শিল্পকারখানার উন্নয়নে সুযোগ সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করেছে, ইরানের বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইরানিদের সরকারের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলবে। ওয়াশিংটনের এই পরকল্পনাকে দুঃস্বপ্ন বলে আখ্যা দেন খামেনি।

খামেনি আরো বলেন, পরমাণু কার্যক্রমের উন্নয়ন ইরানের ভবিষ্যতের জন্য খুবই জরুরি। এসময় ছয়জাতির সঙ্গে ২০১৫ সালে করা পরমাণু চুক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। যাকে ভয়ংকর চুক্তি অভিহিত করে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নেন ট্রাম্প।

Originally posted 2020-08-03 07:28:28.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *