খায়রুজ্জামানকে দেশে পাঠানো আটকালেন মালয়েশিয়ার হাইকোর্ট

মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে ঢাকায় ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির হাইকোর্ট। খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিটা রহমানের আইনজীবীর করা আবেদনে মালয়েশিয়ার আদালত আজ মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এই আদেশ দেন বলে দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

১৯৭৫ সালে জেলহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ায় খায়রুজ্জামানকে আটক করে মালয়েশিয়ার পুলিশ। খায়রুজ্জামানের স্ত্রীর আইনজীবীর করা আবেদনে বিচারক মোহাম্মাদ জাইনি মালাজান আজ এই নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম।

ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিটা রহমানের করা আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ২০ মে দিন ঠিক করে দিয়েছেন মালয়েশিয়ার আদালত।

৬৫ বছর বয়সী খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিটা রহমানের করা আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে অজ্ঞাত কারণে তাকে ফেরত চেয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি খায়রুজ্জামানকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তার আমপাঙের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়।

সাবেক ওই কূটনৈতিকের আইনজীবী দাবি করেন, তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ছিলেন। তার কাছে ইউএনএইচসিআরের কার্ডও ছিল। তিনি এখন পর্যন্ত কোনো অভিবাসী আইন লঙ্ঘন করেননি। তাই তাকে তুলে নেওয়া বেআইনি ছিল।

আবেদন নিয়ে প্রত্যার্পণের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে বিচারক জাইনি বলেন, ‘আমি শুনতে চাই না আদালতে আমি যে আদেশ দিয়েছি তার বিরুদ্ধে তাকে ফেরত পাঠানো হোক। আমি আশা করছি ইমিগ্রেশন বিভাগ এ ব্যাপারটি নিজেদের হাতে তুলে নেবে না।’

অভিবাসন বিভাগের ফেডারেল কাউন্সেল অং সিউ মুন বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী অবস্থানের আদেশ তিনি অ্যাটর্নি-জেনারেলের চেম্বারে ফেরত পাঠাবেন।’

পরে আদালত খায়রুজ্জামানের ‘হেবিয়াস করপাস বিড’ শোনার জন্য ২০ মে তারিখ দিয়েছেন। নির্দেশের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিটা রহমান আদালতের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি আদালতকে বলেন, যদি সম্ভব হয় তাহলে যেন খায়রুজ্জামানকে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। এ সময় তিনি তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে চাওয়ার অনুমতি চান।

খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের সময়কালে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত ছিলেন খায়রুজ্জামান। জাতীয় চার নেতাকে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর খায়রুজ্জামানকে ঢাকায় ফিরে আসতে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কিন্তু জীবননাশের শঙ্কায় খায়রুজ্জামান কুয়ালালামপুরে ইউএনএইচসিআরের কাছে যান এবং মালয়েশিয়ায় তার অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি পরিচয়পত্র পান। এরপর থেকে তিনি শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছিলেন।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *