বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাধীন বাণিজ্য চায় মিজোরাম

মিয়ানমারের সঙ্গে যে নিয়মে স্বাধীন বাণিজ্য করে আসছে ঠিক সেই নিয়মে বাংলাদেশের সঙ্গেও ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চায় ভারতের উত্তর-পূবাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরাম।

আর এ জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো অনুমোদন লাগবে না বলে জানিয়েছেন মিজোরাম রাজ্যের বাণিজ্য ও শিল্পবিষয়ক মন্ত্রী ড. আর লালথ্যাংলিয়ানা।

রবিবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে বাংলাদেশে সফররত মিজোরাম প্রতিনিধিদলের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এই আগ্রহের কথা জানান ড. লালথ্যাংলিয়ানা। রাজ্যটির স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, প্রযুক্তি ও উচ্চশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি।

বৈঠক শেষে টিপু মুনশি বলেন, ভারতের অঙ্গরাজ্য মিজোরামের সঙ্গে বাংলাদেশের ৩১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। তারা আমাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ বাড়াতে চায়। এটি আমাদের জন্য ভালো দিক। কারণ আমরাও চাই ভারতের সঙ্গে বিশেষ করে উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে আমাদের রপ্তানি বাড়াতে। এখন তারাও আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমরা আশা করছি আগামীতে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়বে।

সীমান্ত লাগোয়া মিজোরামে বাংলাদেশের তৈরি নানা ধরনের পণ্যের ভালো চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, টয়লেট্রিজ, সেনেটারি, প্লাস্টিক, জুসসহ নানা পণ্য। আবার মিজোরাম তাদের পাথর, বাঁশ, বেত, আদা, মরিচ, কাঠসহ বাংলাদেশে চাহিদাযোগ্য পণ্য রপ্তানি করতে চায়।

সফররত মিজোরামের বাণিজ্য ও শিল্পবিষয়ক মন্ত্রী জানান, মিজোরাম ভারতের অঙ্গরাজ্য হলেও দেশটির সংবিধান ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী তারা ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই বিধির বলে তারা কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন ছাড়াই মিয়ানমারের সঙ্গে স্বাধীনভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছে। একই নিয়মে বাংলাদেশের সঙ্গেও বাণিজ্য করার সুযোগ আছে।

ড. আর লালথ্যাংলিয়ানা বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে নানা ধরনের শুল্ক-অশুল্ক বাধা থাকলেও আমাদের রাজ্যে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এসব জটিলতা থাকবে না। কারণ ব্যবসা-বাণিজ্য করতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আমাদের কোনো অনুমোদন নিতে হচ্ছে না। মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা এভাবে বাণিজ্য করে আসছি। বাংলাদেশের সঙ্গেও কোনো সমস্যা হবে না।

ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে মিজোরাম নিরাপদ উল্লেখ করে রাজ্যটির মন্ত্রী আরও বলেন, মিজোরাম একটি শান্তিপূর্ণ রাজ্য। এখানে ব্যবসা ও বিনিয়োগের চমৎকার সুযোগ রয়েছে। ব্যবসা সম্প্রসারণে বাংলাদেশের যে কোনো উদ্যোগ মিজোরাম সাদরে গ্রহণ করবে।

মিজোরাম বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বা আগ্রহ দেখাচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাণিজ্য বাড়াতে সীমান্তে বর্ডার হাটের সংখ্যা বাড়াতেও তারা আগ্রহ দেখিয়েছে। ইতোমধ্যে তারা সীমান্তের চারটি পয়েন্টে হাট স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে। রাজ্যটির এমন আগ্রহে খুব শিগগিরই বর্ডার হাট উদ্বোধন করা হবে। তারা নৌপথেও যোগাযোগ বাড়াতে চায়। আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর, সড়ক-নৌপথ তারা ব্যবহার করতে চায়। এর থেকে বাংলাদেশের রাজস্ব আয় হবে।

Originally posted 2021-03-21 19:58:00.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *