ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করবে ইরান

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধির করার কাজ শুরু করতে চায় ইরান। জাতিসংঘের পরমাণু নজরদারি সংস্থা বলছে, এটি এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য লঙ্ঘন।

এদিকে জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার মধ্য দিয়ে ইরানকে ‘প্রতিরোধ’ লড়াই থেকে পিছু হটানো যাবে না বলে হুঁশিয়ার দিয়েছেন দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের কমান্ডার ইসমাইল ঘানি।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরান ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ পরমাণু সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে তাদের পরিকল্পনার কথা ফর্দো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্লান্টকে জানিয়েছে। ইরানের এই পরমাণু সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পটি দেশটির একটি পাহাড়ের ভেতরে নির্মিত স্থাপনা।

আইএইএ আরো বলছে, ‘সংস্থাকে যে চিঠিটি ইরান দিয়েছে, সেখানে এই সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম কখন থেকে হবে তা বলা হয়নি।’

একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করার জন্য শতকরা ৯০ ভাগের বেশি মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। সেই হিসেবে ইরানের কাছে এখনো ঐ পরিমাণে ইউরেনিয়াম নেই। তবে ২০১৫ সালের চুক্তিতে ইরানের এই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৪ শতাংশের নিচে রাখার কথা ছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে এনে পুনরায় ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেন। এরপর থেকেই ইরান এই চুক্তি লঙ্ঘন শুরু করে।

দেশটির শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিযাদে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় গত মাসে ইরানের পার্লামেন্ট পরমাণু সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা বিষয়ক একটি আইন পাশ করে।

ঐ বিলটিতে বলা হয়, ইরানের তেল ও আর্থিক খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দুই মাসের মধ্যে শিথিল না করলে ইরানের সরকার ২০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ আবারও শুরু করবে। নাতাঞ্জ এবং ফর্দো ইরানের পরমাণু স্থাপনায় জাতিসংঘের পরিদর্শকদের যেন যেতে দেওয়া না হয়, সেই বিষয়েও ঐ আইনে আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার মধ্য দিয়ে ইরানকে ‘প্রতিরোধ’ লড়াই থেকে পিছু হটানো যাবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের কমান্ডার ইসমাইল ঘানি।

শুক্রবার সোলেইমানি হত্যার এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে তিনি বলেন, ‘ইরান এখনো জবাব দিতে প্রস্তুত। আমেরিকা অপকর্ম করে কুদস বাহিনীকে প্রতিরোধের পথ থেকে পিছু হটাতে পারবে না।’

২০২০ সালের ৩ জানুয়ারিতে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের বিমানবন্দরে চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইরানের সবচেয়ে প্রভাবশালী সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর এলিট ইউনিট কুদস ফোর্সের প্রধান ছিলেন সোলেইমানি। তাকে হত্যার ঘটনার পরপরই ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে কয়েক দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইরান। সোলেইমানি নিহত হওয়ার পর কুদস ফোর্সে তার স্থলাভিষিক্ত হন কমান্ডার ইসমাইল ঘানি।

Originally posted 2021-01-03 04:34:03.



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *