চ্যাম্পিয়ন দল কত টাকা পাবে?

করোনাভাইরাসের কারণে টুর্নামেন্টটা শেষ করা নিয়েই দেখা দিয়েছিল সংশয়। শেষ পর্যন্ত বায়ো-বাবল সিস্টেমের মধ্যে রেখে, সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে, দর্শকহীন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হলো ইউরোপ সেরার টুর্নামেন্ট, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।

টুর্নামেন্ট শেষ করতে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে মাত্র ১২ দিনের সময় নিয়েছে উয়েফা। পর্তুগালের রাজধানী লিজবনে একসঙ্গে প্রতিটি দলকে রেখে আয়োজন করা হলো টুর্নামেন্টের নকআউট পর্ব। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে এলো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।

আজ ফাইনাল। পিএসজি এবং বায়ার্ন মিউনিখ মুখোমুখি। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হবে ম্যাচটি। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ইউরোপের ঘরোয়া লিগের মৌসুম। প্রস্তুতি শুরু হবে আগামী মৌসুম শুরু করার।

কে জিতবে আজ? পিএসজি না বায়ার্ন মিউনিখ? যেই জিতুক, চ্যাম্পিয়ন হলে কত টাকা পাবে বিজয়ীরা। রানারআপরাই বা কত করে পাচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে। ভক্ত-সমর্থকদের মনে এ প্রশ্ন লেগেই থাকে। তার উত্তরই জানার চেষ্টা করবো এখানে।

ইউরোপের প্রায় প্রতিটি ক্লাবেরই লক্ষ্য থাকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চূড়ান্ত পর্বে নাম লেখানোর। অন্য যে কোনো কিছুর চেয়ে এর পেছনে অর্থনৈতিক কারণটাও থাকে অনেক বড়। কারণ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চূড়ান্ত পর্বে নাম লেখানো তথা এই টুর্নামেন্টে খেলতে পারলেই বিশাল অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যায়।

গ্রুপ পর্বে নাম লেখাতে পারলেই কয়েক মিলিয়ন ইউরো যোগ হয়ে যায় ক্লাবগুলোর অ্যাকাউন্টে। এরপর টিভি রাইটস, টিকিট অ্যান্ড গেট মানিসহ শেষ পর্যন্ত অংক যেটা দাঁড়ায়, সেটা সত্যি সত্যি অকল্পনীয়।

তো দেখা যাক, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নাম লেখানো থেকে শুরু করে চ্যাম্পিয়ন হওয়া পর্যন্ত কে কত টাকা পাচ্ছে? অংকটা হিসেব করে বের করা হলো জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন হবে যে দলটি, তারা প্রাইজমানি হিসেবে পাবে ১৯ মিলিয়ন ইউরো (১৯০ কোটি টাকা)। রানারআপ দল প্রাইজমানি হিসেবে পাবে ১৫ মিলিয়ন ইউরো (১৫০ কোটি টাকা)।

তবে, এটুকু ভাবলে ভুল হবে যে চ্যাম্পিয়ন হলে মাত্র ১৯০ কোটি কিংবা রানারআপ হলে ১৫০ কোটি টাকা প্রাইজমানি পাবে। মূলতঃ ফাইনালে ওঠা কিংবা চ্যাম্পিয়ন্স হতে পারলে সংশ্লিষ্ট দলগুলো সব মিলিয়ে যে প্রাইজমানি অর্জন করে, তা তোর রীতিমত বিস্ময়কর।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মূলতঃ পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করেই প্রাইজমানি নির্ধারিত হয়। সে ক্ষেত্রে ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া দলগুলো শেষ পর্যন্ত কত প্রাইজমানি পাচ্ছে?

ধরা যাক, এবারের ২০১৯-২০ মৌসুমে একটি দল গ্রুপ স্টেজে নাম লিখেই পেয়ে গেলো ১৫.২৫ মিলিয়ন ইউরো। এরপর অংশ নিলো গ্রুপ পর্বের ড্রতে। তাতে পেলো ৯ লাখ ইউরো। গ্রুপ পর্বের প্রতিটি ম্যাচে জিতলো। তাতে ম্যাচ প্রতি পেলো ২.৭ মিলিয়ন ইউরো করে। দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পর পেলো ৯.৫ মিলিয়ন ইউরো, কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে পেলো আরও ১০.৫ মিলিয়ন ইউরো।

সেমিফাইনালে ওঠার পর পেলো ১২ মিলিয়ন ইউরো। সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পেলো ১৯ মিলিয়ন ইউরো। কিংবা রানারআপ হলে পেলো ১৫ মিলিয়ন ইউরো। সব মিলিয়ে টুর্নামেন্ট থেকেই চ্যাম্পিয়ন দল পাচ্ছে ৮২.৪৫ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৮২৫ কোটি টাকা)।

এতো গেলো শুধু খেলা, জয়-পরাজয় এসবের হিসেব। আর বাইরেও অনেক আয় রয়েছে ক্লাবগুলোর। প্রতিটি ক্লাবই টেলিভিশন মার্কেট পোল থেকে প্রচুর মরিমাণে আয় করে থাকে। যদিও এই টেলিভিশন মার্কেট পোলের বিষয়টা বাজারদরের মত ওঠানামা করে।

টেলিভিশন মার্কেট পোল থেকে মোট আয় হয়ে থাকে ২৯২ মিলিয়ন ইউরো (২৯২১ কোটি টাকা প্রায়)। সুতরাং, এই অর্থ বন্টনের আনুপাতিক হারে চ্যাম্পিয়ন দল কত করে পেতে পারে? হিসেব করলেই তো চোখ কপালে উঠে যাওয়ার জোগাড়। মোট কথা, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা দল কত হাজার কোটি টাকা অর্জন করবে এটা থেকে, তা এখনই সম্পূর্ণরূপে বলা মুস্কিল।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked as *