৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঐতিহ্যে ফিরবে বুড়িগঙ্গা
৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বুড়িগঙ্গার পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। নদী খনন, অবকাঠামো উন্নয়ন, ব্রিজ, ওভারপাস নির্মাণসহ সার্বিক উন্নয়ন করা হবে। এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিকে (এমআইএসটি)।
পুরান ঢাকার মুসলিমবাগে আদি চ্যানেল থেকে শুরু করে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বেড়িবাঁধ সড়কের পশ্চিম পাশের খালকে বুড়িগঙ্গার সঙ্গে যুক্ত করা হবে। চ্যানেলের দুই পাশে দৃষ্টিনন্দন সবুজ গাছগাছালিসহ উন্মুক্ত স্থান, ব্রিজ, ওভারপাস ও বিনোদন স্পট থাকবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রাজধানীর বড় একটি অংশের পানি নিষ্কাশন সমস্যারও সমাধান হবে। পাশাপাশি লালবাগ, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর, ইসলামবাগ আরো আধুনিক ও বাসযোগ্য হবে। ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমআইএসটি বুড়িগঙ্গার এ চ্যানেল পুনরুদ্ধারে কাজ করবে।
বর্তমানে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলটি আবর্জনায় পূর্ণ হয়ে আছে। পরিবেশও দূষিত হয়েছে। প্রভাবশালীরা বুড়িগঙ্গার জমি দখল করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। অনেকে জাল দলিলও করেছেন। কোনো কোনো স্থানে মসজিদসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধারে সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছেন এলাকাবাসী। চ্যানেল পুনরুদ্ধারে ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিএসসিসির তৎকালীন মেয়রকে নির্দেশ দেন। বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস নতুন করে এ চ্যানেল পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নিলেন।
কামরাঙ্গীরচরের এক বাসিন্দা বলেন, এরশাদের শাসন আমলে (১৯৮৭-১৯৮৮ সালে) বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল থেকে নৌকায় করে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমায় যেতাম। ১৯৯০ সালে বেড়িবাঁধ হওয়ার পর থেকে আদি চ্যানেল দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। চ্যানেলের জায়গায় স্থায়ী অবকাঠামোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কলকারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। চ্যানেল রক্ষায় প্রকল্পটির দ্রুত বাস্তবায়ন দরকার। ডিএসসিসির কামরাঙ্গীরচরের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন বলেন, বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।
ডিএসসিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. খায়রুল বাকের বলেন, বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল উদ্ধারের পরিকল্পনা হয়েছে। সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা। এটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার এক অংশের পানি নিষ্কাশন সমস্যার সমাধান ঘটবে। আদি চ্যানেলের দুই পাশে আধুনিকায়ন হবে এবং আশপাশের পরিবেশের উন্নয়ন ঘটবে।